Sunday, July 16, 2023

ব্লাড প্রেসার কমানোর টিপস

 ব্লাড প্রেসার কমাতে সাধারণত নিম্নলিখিত কিছু পরামর্শ মেনে চলা প্রয়োজন। মনে রাখবেন যে, ব্লাড প্রেসার সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে এবং নির্ধারিত চিকিৎসা নিলেই পরামর্শ করা ভালো। নিম্নলিখিত উপায়গুলি বিবেচনা করুন:


স্বাস্থ্যকর খাবার: নিয়মিত খাবারে শাক-সবজি, ফল, পুষ্টিকর অনামাস, খাদ্যতেল এবং প্রোটিন সম্পন্ন খাদ্য সহজেই পাচ্য হয়ে থাকে। রুচিশীল খাবার পরিবর্তন করলে স্বাস্থ্যকর প্রভাব পাওয়া যায়।


কম নির্মাণ নিম্নতর নিয়ন্ত্রণে নামতে হলে, শুধুমাত্র নিম্ন নির্মাণের নিয়ন্ত্রণ দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এটির জন্য শ্বাসায়মান যন্ত্রের ব্যবহার করা হতে পারে।


ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁচি, দৌড়, যোগাসন বা সাধারণ পদার্থ ব্যবহার করে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে মাধ্যমিক ভূমিকা পালন করতে পারে।


ওজন প্রবন্ধন: বাড়ানো বৃদ্ধি ব্যতিবাহিত ব্লাড প্রেসারের একটি জনপ্রিয় কারণ হতে পারে। যদি আপনি আপনার ওজন সাধারণত নির্ধারিত সীমা মধ্যে রাখতে পারেন, তাহলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সহায়তা হতে পারে।


অলসতা ও স্ট্রেস মানযোগ: নিয়মিত পরিমিত অলসতা ও স্ট্রেস মানযোগ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে। মেডিটেশন, যোগাসন, আলোচনা ও রিলেক্সেশন প্রয়োগ করা যেতে পারে যাতে আপনি মানসিক তন্দ্রাবহতা কমাতে পারেন।


এই পরামর্শগুলি অবলম্বন করে এবং যদি আপনি কোনও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ চিকিত্সা উপসর্গ নিয়মিত করেন, তাহলে আপনি আপনার ব্লাড প্রেসার








Friday, July 14, 2023

ডালিমের মধ্যে আছে হাজারো পুষ্টিগুণ

​ডালিম বীজগুলি হচ্ছে খাবার গ্রাম জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উদাহরণ যার উপকারিতা বিভিন্ন সামাজিক, পুষ্টিগুলি এবং অর্থনীতিগুলিতে পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে কিছু উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:


পুষ্টিগত মানসম্পন্নতা: ডালিম সম্পূর্ণ প্রোটিন সম্পন্ন একটি খাবার বণ্টন করে। এটি গুড়ে মানসম্পন্নতা, ভিটামিন, খনিজ ও আনুমানিক অংশ সরবরাহ করে, যা প্রতিদিনের পুষ্টিগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সাহায্য করে। ডালিমের সংগ্রহপত্র ধান থেকে পাওয়া যায় যা আমাদের পুষ্টিগত দৈনন্দিন খাবারের প্রধান উৎস।


প্রকৃতিসম্পদ সংরক্ষণ: ডালিম একটি কার্বন পদার্থ সংরক্ষণ পদ্ধতি যা পৃথিবীর স্থিতিতে গ্রীষ্ম, গ্রীষ্মকাল এবং বর্ষাকালের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডালিম বীজগুলি সাধারণত শুষ্কভাবে থাকে এবং খাদ্যগুলির প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের সমর্থিত সংরক্ষণ পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে তা দ্রুত বিপথে তোলা যায় না। এটি জৈব সংক্রান্ত উৎসগুলির পরিবর্তনের মতো পরিবর্তন করতে সাহায্য করে এবং স্থানীয় উৎসগুলির বণ্টন করে।


আর্থিক উন্নতি: ডালিম চাষ একটি আর্থিক প্রয়োজনীয় কার্য হতে পারে, যা কৃষি প্রয়োজনীয়তা এবং পুষ্টিগত মানসম্পন্নতা উন্নত করে। এটি গ্রামের মানুষের জীবনযাপনের একটি প্রধান উৎস হয় এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে সাহায্য করে। উপকারিতাগুলির এই সংযোগে, ডালিম চাষ একটি গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নতির উপায় হতে পারে, যা সমগ্র সমাজের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।


এগুলি মাত্র কয়েকটি উদাহরণ, ডালিমের আরও অনেক




Labels:

Sunday, January 24, 2021

ঘরের ম্যাজিক খাবারে ম্যাজিক ডায়েট

ওজন কমাতে গিয়ে খাওয়াই ছেড়ে দেন অনেকে। আবার অনেকে শশা-গাজর খেয়েই কাটিয়ে দেন সারা দিন। হতাশা নিয়ে একসময় আবিষ্কার করেন, ওজন তো কমছেই না বরং শরীরে দেখা দিচ্ছে নানাবিধ অপুষ্টি। অকালে চুল পড়ে যাচ্ছে, ধীরে ধীরে চামড়া শুষ্ক হয়ে পড়ছে আর চেহারায় লাবণ্য নেই বললেই চলে।

স্টারভেশন অবস্থাঃ
পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, শরীর দীর্ঘদিন ধরে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও খাবার না পেলে শরীর ‘স্টারভেশন’ অবস্থায় চলে যায়। প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে খাবার পাওয়ার কারণে শরীর সেই খাবার ব্যবহার করার পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং খাবারকে জমিয়ে রাখতে শুরু করে। এটাই হল ‘স্টারভেশন’ অবস্থা। তখন ওজন তো কমেই না বরং অনেক ক্ষেত্রেই বাড়তে শুরু করে। অন্যদিকে শরীরের ভেতরের কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে মেটাবলিক সিস্টেমের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে একসময় আমাদের খাবারের ক্যালরি চর্বি হয়ে শরীরে জমা হতে শুরু করে।

ম্যাজিক ফুড
পুষ্টিবিজ্ঞানীরা ৭ ধরনের খাদ্যোপাদানকে ‘ম্যাজিক ফুড’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে, এ ৭ ধরনের খাবার পরিমিত পরিমাণে নিয়মিত খেলে ওজন অবশ্যই কমবে। ফল ও সবজি এ খাবারগুলোতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও ফাইবার বেশি থাকার কারণে তা হার্টের জন্য ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল ও মেদের জন্য দায়ী পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। খাবারের আঁশ চর্বিকণাকে চারিদিক থেকে বেঁধে ফেলে। পানি মলমূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ফল ও সবজিতে আঁশজাতীয় উপাদান বেশি আছে। এজন্য এগুলো ক্ষুধার অনুভূতি হ্রাস করে। দেখা গেছে প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচ ধরনের ফল ও সবজি খেলে একজন মানুষ অন্যান্য খাবারের প্রতি আকর্ষণ কম বোধ করে। এ বিশেষ কয়েকটি কারণেই পেটের মেদ কমাতে সব ধরণের ফল ও সবজি খেতে পরামর্শ দেয়া হয়।

গ্রীন টি
গ্রীন টি বা সবুজ চা হালকা কেবল শরীরকে সতেজই রাখে না, সঙ্গে ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। গ্রীন টিতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রাচুর্য যা পরোক্ষভাবে অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।

সুষম খাবারে ফ্যাট যুক্তকরণ
বাদাম ও অলিভ অয়েল প্রতিদিনের খাবার তালিকায় প্রোটিন থাকা যেমন অত্যাবশ্যক, ঠিক তেমনি জরুরি লো ‘ফ্যাট’-জাতীয় খাবারের উপস্থিতি। এটাই সত্যি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, সব ‘ফ্যাট’ই শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। শরীরকে সব ধরনের খাদ্য উপাদানের সুষম বণ্টনই শারীরিক সুস্থতাকে পরিপূর্ণতা প্রদান করে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও মিনারেলের মতো দেহে ফ্যাটেরও প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় কিছু ভিটামিন শোষণের জন্য প্রয়োজন ফ্যাট। এমনকি শরীরে এ, ডি, কে এবং ই ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে, যদি শরীর তার প্রয়োজনমতো ফ্যাটের সরবরাহ না থাকে। তাই প্রতিদিনের খাবারে থাকুক বিভিন্ন বাদাম যেমনঃ কাঠবাদাম, চিনাবাদাম এবং কুমড়ার বিচি, শিমের বিচি, কিডনি বিন ও জলপাইয়ের তেল।

Saturday, January 23, 2021

শুধু স্বাদেই ভালো নয়, পেয়ারায় রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্যগুণ

সবুজ মিষ্টি এই ফলটি খেতে সবাই পছন্দ করে। একটু চাট মশলা বা নুন ছড়িয়ে এক বাটি পেয়ারা চোখের নিমেষে শেষ হয়ে যাবে। শুধু স্বাদেই নয়, পেয়ারার স্বাস্থ্যগুণও একাধিক। পেয়ারাকে পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলা হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, লাইকোপিন এবং ভিটামিন এ, এই উপাদানগুলি ত্বকের জন্য খুব উপকারি। এছাড়াও এতে রয়েছে ফাইবার, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। পেয়ারা ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ, যা দেহকে খাবার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করত  পারে

ডায়াবেটিসও একটি মহামারি রোগ

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বেশি ক্ষুধা অনুভূত হওয়া, পানি পিপাসা লাগা, ঠিকমতো পরিশ্রম করতে না পারা, কোনো একটি ক্ষত বা ইনফেকশন ভালো না হওয়া, দীর্ঘদিন ধরে কাশি ভালো না হওয়া, মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের ইনফেকশন ভালো না হওয়া, বন্ধ্যত্ব ইত্যািদ ডায়াবেটিসের লক্ষণ।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা কখনোই পুরোপুরি নিরাময় হয় না, কিন্তু সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটি একটি মহামারি রোগ।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে ডায়াবেটিসের রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা কখনোই পুরোপুরি নিরাময় হয় না, কিন্তু সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটি একটি মহামারি রোগ। বাংলাদেশের এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া কঠিন, যেখানে অন্তত একজন ডায়াবেটিসের রোগী নেই। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে ডায়াবেটিসের রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। সঠিক তথ্য ও সচেতনতার অভাবে দিন দিন লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে এর হার।

আর করোনা মহামারিতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা রয়েছেন উচ্চ ঝুঁকিতে। এই সময়ে তাঁদের কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা হলো ‘ডিজিটাল হসপিটাল লাইভ: হ্যালো ডক্টর’-এর দ্বিতীয় পর্বে।

ডা. শ্রাবণ্য তৌহিদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ডিজিটাল হেলথ কেয়ার সলিউশনসের ক্লিনিক্যাল কনসালট্যান্ট ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি ১৭ ডিসেম্বর প্রথম আলো ও ডিজিটাল হসপিটালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

প্রথমেই ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতা বাড়লেও অনেক মানুষই বুঝতে পারেন না যে তিনি এ রোগে আক্রান্ত।’ এ রোগের কিছু লক্ষণ আছে, যেমন: ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বেশি ক্ষুধা অনুভূত হওয়া, পানি পিপাসা লাগা, ঠিকমতো পরিশ্রম করতে না পারা, কোনো একটি ক্ষত বা ইনফেকশন ভালো না হওয়া, দীর্ঘদিন ধরে কাশি ভালো না হওয়া, মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের ইনফেকশন ভালো না হওয়া, বন্ধ্যত্ব—এ ধরনের লক্ষণ থাকলেই সবার উচিত হবে ডায়াবেটিস টেস্ট করা।

ডায়াবেটিস টেস্ট করা হয় ওজিটিটির মাধ্যমে। এই টেস্টের প্রথমে সকালবেলা খালি পেটে রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এরপর চিনিমিশ্রিত পানি পান করিয়ে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে আবার নমুনা সংগ্রহ করা হবে। আর যেসব রোগী কর্মব্যস্ততা বা অন্য কোনো কারণে সকালে সময় পান না, তাঁদের জন্য আছে এইচবিএওয়ানসি এবং আরবিএস টেস্ট। খালি পেটে ৬ এবং ভরা পেটে ৮ হলো গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা।

আবার অনেকের ক্ষেত্রে কিন্তু কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না। বিশেষ করে টাইপ–টু ডায়াবেটিসের বেলায়। তাই ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী পরামর্শ দেন, ৪০ বছর বয়স হলে, ওজন বেশি থাকলে অর্থাৎ বিএমআই যাঁদের ২৩–এর বেশি, যাঁরা কম পরিশ্রম করেন, টেনশন বা স্ট্রেস যাঁদের বেশি, যদি পরিবারে কারও ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে, তাহলে অবশ্যই বছরে একবার টেস্ট করাতে হবে। ইদানীং ৪০ বছরের কম বয়সীদের ডায়াবেটিস দেখা যাচ্ছে। কারণ, দেশে তরুণদের ভেতর ফাস্ট ফুড–জাতীয় খাবারের জনপ্রিয়তা বেশি এবং তাদের পরিশ্রম না করার প্রবণতা বেশি। রাত জাগা এবং ধূমপানের জন্য ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। যাদের এই অভ্যাস আছে, তাদেরও অন্তত একবার ডায়াবেটিস টেস্ট করা উচিত।

‘ইমপেয়ারড গ্লুকোজ টলারেন্স’ বলে মেডিকেল একটি টার্ম আছে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে, তবে এতটাও বাড়েনি যে তাকে ডায়াবেটিস বলতে হবে। এ ধরনের মানুষের সংখ্যাও আমাদের দেশে অনেক। ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের মানুষ যদি আমরা এখনই শনাক্ত করতে পারি, তাহলে তাদের ডায়াবেটিসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা সহজ হবে।’ এ জন্য সবাইকে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী বলেন, ডায়াবেটিস চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হলো খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখা। খাদ্যাভ্যাসে কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবারের আধিক্য থাকায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকিটা বেশি। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে বেশি করে মাছ, মাংস, ডাল, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এমন সবজি ও বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তিন বেলা না খেয়ে ছয় বেলা খেতে হবে। এর ভেতর প্রধান মিল পরিমিত পরিমাণে খেয়ে এর মাঝখানে হালকা নাশতা খেতে হবে। আর রাতের খাবার আটটার আগেই খেয়ে ফেলতে হবে।’

ডায়াবেটিক রোগীদের ভিটামিন সি–যুক্ত টকজাতীয় ফল খাওয়া উচিত। করোনার এ সময়ে এ ধরনের ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে বলে জানান এ বিশেষজ্ঞ। অন্যান্য সময়ে এই ফলের পাশাপাশি মৌসুমি মিষ্টি ফলগুলোও খাওয়া যাবে, তবে পরিমিত পরিমাণে।

করোনার এই সময়ে ডায়াবেটিসের যেসব রোগীর সামর্থ্য আছে, তাঁরা বাইরে হাঁটতে পারবেন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটতে হবে। তবে সবার উচিত প্রতিদিনই হাঁটা। আগে বলা হতো ভোরবেলা হাঁটা ভালো। তবে এখন খালি পেটে না খেয়ে ভোরবেলায় হাঁটা সমর্থন করা হয় না। এর সঙ্গে হার্ট স্ট্রোকের একটি ঝুঁকির কথা শোনা যাচ্ছে। সকালবেলা নাশতা খাওয়ার আধা ঘণ্টা পরে বা সন্ধ্যাবেলায় হাঁটা বা ব্যায়াম করা যেতে পারে। এ সময় ঘরের ভেতরও হাঁটাচলা করা যায়। যাদের অস্টিওআরথ্রাইটিস আছে, তাঁরা বাসায় বসে স্ট্রেস ব্যায়াম করতে পারেন।

করোনার সময়ে যেহেতু চাইলেই বাইরে বের হওয়া সম্ভব নয়, সেহেতু ডায়াবেটিসের রোগীদের বাসায় একটি নিজস্ব গ্লুকোমিটার রাখার পরামর্শ দেন ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী। এভাবে নিজের গ্লুকোজের পরিমাণ জেনে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন তিনি। যেসব রোগীর কোভিড হয়েছে, তাদের গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকলে ইনসুলিন নেওয়া যেতে পারে। এ সময় ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া, এক ঘণ্টা পরপর হাঁটাহাঁটি করা, নিয়ম করে পানি পান এবং সন্ধ্যায় বাসার ভেতর ৩০ মিনিট বা এক ঘণ্টা হাঁটার প্রতি জোর দিতে হবে।

এ সময়ে ঘরে কেউ অসুস্থ হলে ডায়াবেটিসের রোগীদের উচিত হবে তাদের থেকে দূরে থাকা বা স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়া। নিয়মিত গারগল করা এবং হাঁটাচলার সময় কোনোভাবে ব্যথা না পায় বা ক্ষত না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য রোগ থেকে থাকলে তার চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে হবে। আর স্ট্রেস কমানোর জন্য যেকোনো চিত্তবিনোদনের মাধ্যম ব্যবহার করার কথা বলেন ডা. জয়ন্ত পাল চৌধুরী।

ডায়াবেটিসের রোগীদের শ্বাসকষ্ট হলে তাঁরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না। এ জন্য করোনার সময়ে তাঁদের উচিত হবে প্রতিটি লক্ষণকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া এবং লক্ষণ দেখা দেওয়ার তিন থেকে চার দিনের ভেতর টেস্ট করা। এর ভেতর সুগার লেভেল বেশি থাকলে দ্রুত তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

করোনায় আক্রান্ত ডায়াবেটিসের রোগীদের গুরুতর কারণে হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের আগে থেকেই আশপাশে হাসপাতাল ও যোগাযোগব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে রাখতে হবে।

Friday, January 22, 2021

পুরুষও ‘বন্ধ্যা’ হতে পারে

 বন্ধ্যাত্ব শরীরের প্রজননগত অসুখ। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক নারী-পুরুষ এই জটিল সমস্যায় আক্রান্ত। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারেন না এ অবস্থায় কী করণীয় বা কার কাছে গেলে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাবে। এ নিয়েই আলোচনা হলো সাপ্তাহিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ডিজিটাল হসপিটাল লাইভ: হ্যালো ডক্টর’-এর পঞ্চম পর্বে।

ডা. শ্রাবন্য তৌহিদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুনিরা ফেরদৌসি। অনুষ্ঠানটি গত ৮ ডিসেম্বর প্রথম আলো ও ডিজিটাল হসপিটালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

এক বছর ধরে যদি কোনো দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করেও সন্তান ধারণ করতে না পারেন, তখন এই অবস্থাকে বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। বন্ধ্যাত্ব নারী ও পুরুষ উভয়ের হতে পারে। একজন দম্পতি নানা কারণে এ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। ডা. মুনিরা ফেরদৌসি বলেন, যখন কোনো দম্পতি এই সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান, তখন সবার আগে তাঁদের ইতিহাস জানা হয়।

বিস্তারিত ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে। তাঁদের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখা হয় নিয়মিত মাসিক হচ্ছে কি না। কারণ, এটি ঠিকমতো হলে ওভ্যুলেশনও ঠিকমতো হয়। এরপর দেখা হয় জরায়ুতে কোনো সমস্যা আছে কি না। জরায়ুতে কনজেনিটাল সমস্যা থাকতে পারে। যেমন অস্বাভাবিক আকৃতি, দুটি জরায়ু, জরায়ুতে দুটি ভাগ বা টিউমার প্রভৃতি। টিউবাল ফ্যাক্টর ও জরায়ু মুখের সমস্যা থাকলেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

আবার পুরুষের ক্ষেত্রে সবার আগে বীর্যের মান বা স্পার্ম কাউন্ট করা হয়। যদি এসবে কোনো ধরনের সমস্যা না থাকে, তাহলে পরবর্তী ধাপে অন্যান্য ইনভেসটিগেশন করা হয় বলে জানান ডা. মুনিরা ফেরদৌসি।

নারীদের এই সমস্যা নির্ণয়ের জন্য অনেক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু পুরুষের মাত্র একটি পরীক্ষা করলেই হয়ে যায়। এ জন্য ডা. মুনিরা ফেরদৌসির পরামর্শ, সবার আগে স্বামীর বীর্য পরীক্ষা করা। এতে যদি তাঁর সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে অনেক টাকা খরচ করে স্ত্রীর পরীক্ষা করার প্রয়োজন হবে না।

নারীদের আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং টিউবের হিস্টেরোসালপিঙ্গোগ্রাফি করার পাশাপাশি হরমোন ও ডায়াবেটিস টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর ফলাফল অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়। তবে ডা. মুনিরা ফেরদৌসি বলেন, চিকিৎসা শুরু করার আগে কাউন্সেলিং অনেক বেশি জরুরি। কারণ, বাচ্চা না হওয়ার কারণে অনেক নারী স্ট্রেসের ভেতর থাকেন। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও স্ট্রেসের জন্য কনসিভ করতে দেরি হয়। এরপর ওষুধ যেমন ওভ্যুলেশন ইন্ডুসার ড্রাগ দেওয়া হয়। ওষুধ গ্রহণের পর নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে। কারণ, এ ধরনের ওষুধ দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়া যাবে না।

অনুষ্ঠানে আইইউআই নিয়েও আলোচনা করা হয়। ইন্ট্রা ইউটেরাইন ইনসেমিনেশন বা আইইউআই সাধারণত পুরুষের বীর্যে সমস্যা থাকলে বা নারীর অনেক বেশি ডিসচার্জ হলে করানো হয়। এই পদ্ধতিতে স্বামীর বীর্য নিয়ে সেটি শোধন করে ওভ্যুলেশনের সময় একটি টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। এর পাশাপাশি সন্তান ধারণের আরেকটি কৃত্রিম পদ্ধতি হলো ‘টেস্টটিউব বেবি’ বা আইভিএফ। স্বামীর বীর্যের সমস্যা বা স্ত্রীর ওভ্যুলেশন ঠিকমতো না হলে বা বয়স বেশি হলে আইভিএফ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর আগে জরায়ুর দেয়াল ঠিক করতে এবং ডিম্বাণু যাতে ভালোভাবে এসে সেখানে বসে, সে জন্য ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর সেই ডিম্বাণু এবং স্বামীর শুক্রাণু নিয়ে ল্যাবে ফারটিলাইজ করানো হয়। এরপর এই ফারটিলাইজড ডিম্বাণুটি জরায়ুতে স্থাপন করা হয়।

ডা. মুনিরা ফেরদৌসি বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বলেন, ‘আমরা বন্ধ্যাত্ব শব্দটি বলতে নারাজ। এর চেয়ে সাবফারটাইল বা কম উর্বর বলা যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে বাচ্চা না হওয়ার জন্য শুধু মেয়েদের দায়ী করা হয়। এ জন্য তাদের অনেক মানসিক অশান্তির ভেতর দিয়ে যেতে হয়। ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে যদি মেয়ের বাচ্চা না হয়, তাহলে ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের কারণেও বাচ্চা হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুজনই দায়ী থাকতে পারে। আবার কারও কোনো সমস্যা না থাকলেও বাচ্চা না হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। তাই শুধু শুধু কোনো মেয়েকে দোষারোপ করা যাবে না। তাকে বলাই যাবে না, তুমিই দায়ী। এতে তার যে স্ট্রেস হয়, তাতেও ওভ্যুলেশন হয় না।’ এ জন্য কোনো মেয়েকে অযথা এ ধরনের কথা না বলে তাঁকে সাহায্য করতে হবে